ঘূর্ণিঝড় ইয়াস সবচেয়ে বেশি তাণ্ডবে চালিয়েছে ভারতের ওড়িশা রাজ্যে। মঙ্গলবার (২৫ মে) রাত থেকেই সেখানকার উপকূলীয় অঞ্চলে তাণ্ডব দেখাতে শুরু করেছিল ইয়াস। প্রকৃতি যখন তার নিষ্ঠুর খেলা দেখাচ্ছে এবং স্থানীয় প্রশাসন যখন ক্ষয়ক্ষতি সামলাতে ব্যস্ত ঠিক তখনই স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত এবং বুধবার সকালে রাজ্যটিতে জন্ম নিয়েছে প্রায় তিন শতাধিক শিশু।
ভারতীয় গণমাধ্যমসূত্রে জানা গেছে, এসব নবজাতকের বেশিরভাগেরই বাবা-মা তাদের নাম রাখতে চান ‘ইয়াস’।
ওড়িশার বালাসোরের বাসিন্দা সোনালী মাইতি জানান, সন্তানের জন্য ইয়াসের চেয়ে ভালো নাম তিনি ভাবতেই পারছেন না। একইভাবে কেন্দ্রপাড়া এলাকার সরস্বতী বৈরাগী বলছেন, তিনি ঝড়ের পরেই নিজের সদ্যজাত মেয়ের নাম ‘ইয়াস’ রেখেছিলেন। এইভাবে প্রত্যেকে তাঁদের নবজাতকের আগমনের সময়টিকে স্মরণীয় রাখতে চেয়ে ঘূর্ণিঝড়ের নামেই নাম দিতে চান।
স্থানীয় এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে একটি ভারতীয় গণমাধ্যম।
আরেক নবজাতকের মা বলেন, ‘আমার সন্তান এই দিনটিতে পৃথিবীতে এসেছিল যা সবার মনে পড়বে। আমি তার নাম রাখলাম ইয়াস।’
প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস নামটির নামকরণ করেছিল ওমান। যার অর্থ দুঃখ। পারসি ভাষা থেকে এই শব্দটি এসেছে।
ইয়াস চলাকালীন সময়ে ওড়িশা অনেক গর্ভবতী নারী আশ্রয়কেন্দ্রে সন্তান জন্ম দিয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস ও প্রবল স্রোতে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বনবিভাগের কয়েকটি জলযান, ওয়াচ টাওয়ার, গোলঘর, রাস্তা, ফুট রেইল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জোয়ারের পানিতে ডুবে মারা গেছে অন্তত চারটি হরিণ।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ইয়াসের প্রভাব শুরু হওয়ার পর থেকে সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদী ও খালগুলোর পানি বাড়তে থাকে। বুধবার প্রায় ৫-৬ ফুট পর্যন্ত পানি উঠে যায় সুন্দরবনে। পানির তোড়ে পূর্ব সুন্দরবনের ১৯টি জেটি, ৬টি জলযান (ট্রলার), দুটি গোলঘর, একটি ফুট রেইল, একটি ওয়াচ টাওয়ার, চারটি স্টাফ ব্যারাক ও একটি রেস্ট হাউজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে কক্সবাজারে আড়াই হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও জেলার বিভিন্ন স্থানে বাঁধের অন্তত ১৪টি স্থান ভেঙে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ মে) কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ এ তথ্য জানান।
No comments:
Post a Comment