Friday, November 13, 2020

ভাইরাল হওয়া সেই খুকির পাশে তরুণরা..........!

 রাজশাহী শহরের একমাত্র নারী পত্রিকা বিক্রেতা তিনি। ৪০ বছর ধরে পত্রিকা বিক্রি জীবিকা নির্বাহ করছেন। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ১১ বছর আগের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠে পত্রিকার এজেন্ট ও স্থানীয় পত্রিকার সার্কুলেশন থেকে পত্রিকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন নগরীতে। খুকির হাতের পত্রিকা পড়ে তারা, খুকির জীবনের গল্প পড়া হয়ে ওঠে না। রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন প্রান্তে ৪০ বছর ধরে পত্রিকা বিক্রি করেন দিল আফরোজ খুকি। খুকিরও গল্প আছে। সে গল্প জানা হয়ে ওঠে না কারো, খুকির ভাইরাল ভিডিও দেখে অনেকেই কাঁদেন, ফেসবুকে শেয়ার দেন কিংবা জানতে চান খুকির বর্তমান অবস্থা।

খুকির জীবনে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে বিয়ের মাত্র এক মাসের মাথায়। স্বামী মারা যান, বিধবা হন এক মাসের মাথায়। উত্তরাঞ্চলের শহরে বিয়ে হলেও সামাজিক রীতি তো আর সামাজিকতা ভেঙে বেরিয়ে পড়েনি। তবুও সেই শহরে খুকি উঠে দাঁড়ালেন। তবে উঠে দাঁড়ানোর গল্পটা সহজ নয়। নিজ পরিবার থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। একসময় ঠিকানা হয় পথ। এর মাঝে হয়তো অনেক ঘটনা ঘটে গেছে। শোনা যায়, বাবা-মা, ভাই-বোনের অবহেলিত সেই নারী ঘর-বাড়ি ছাড়া রাস্তায় পড়েছিলেন। তবুও ভিক্ষের পথ বেছে নেননি। একদিন রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া মানিব্যাগ উপযুক্ত ব্যক্তিকে ফিরিয়ে দেওয়ার সম্মানি হিসেবে ১৫০ টাকা পান। এই ১৫০ টাকা দিয়ে শুরু করেন নিজের উঠে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা। শুরু করলেন পত্রিকা বিক্রি।

জানা গেছে, কিশোরী বয়সে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধের সঙ্গে খুকির বিয়ে হয়েছিল। মাস যেতে না যেতেই স্বামী মারা যান। ১৯৮০ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর পরিবার, আত্মীয়-স্বজন তাকে ঘরছাড়া করেন। ভাইদের আপত্তিতে বাবার বাড়িতে তার জায়গা হয়নি। এরপর থেকেই কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি।

খবরের কাগজ বিক্রি করে একসময় প্রতিদিন ৩০০ টাকা আয় করতেন। এই আয় থেকে নিজের জন্য ব্যয় করতেন মাত্র ৪০ টাকা। হজে যাওয়ার তীব্র বাসনায় ১০০ টাকা ব্যাংকে জমা করতেন। আর ১৬০ টাকাই ব্যয় করতেন মানুষের সেবামূলক কাজে। এর মধ্যে ১০০ টাকা দিতেন এতিমখানায়, ৫০ টাকা দিতেন মসজিদ-মন্দিরে আর ১০ টাকা দিতেন ফকির-মিসকিনকে।

এতদিনে ব্যাংকে জমা হয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। সেই জমানো অর্থ আর পৈতৃকভাবে পাওয়া কিছু সম্পত্তিই তার জীবনের শেষ সম্বল। যা দিয়ে যেতে চান কোনো স্কুলের নামে। সেই দানের টাকা থেকে গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে বৃত্তি। মৃত্যুর পর তার লাশটা যেন জন্ম শহর কুষ্টিয়ায় দাফন করা হয়, সে ইচ্ছাই তিনি জানিয়েছেন। খুকির সময়টা এখন ভালো কাটছে না। কাটছে নানা দুঃখ-কষ্টে। প্রায় ৪০ বছর ধরে পত্রিকা বিক্রির সঙ্গে জড়িত খুকি।

প্রতিদিন সকালে তার শিরোইল মহল্লার বাসা থেকে বের হয়ে হেঁটে রাজশাহী মহানগরীর রেলগেট মার্কেটে পত্রিকার এজেন্টদের কাছ থেকে পত্রিকা কেনেন। তারপর সেখান থেকে হেঁটে হেঁটে রাজশাহীর রেলস্টেশন, আরডিএ মার্কেট, সাহেববাজার, সাগরপাড়া, শিরোইল বাস টার্মিনাল, আলুপট্টি ও নিউমার্কেট এলাকায় পত্রিকা বিক্রি করেন। এসব স্থানে তার কিছু নিয়মিত গ্রাহক আছে। এ ছাড়াও হেঁটে হেঁটে পত্রিকা বিক্রি করেন, কারো কাছ থেকে বাড়তি পয়সা পেলেও নেন না।

জানা গেছে, কিশোরী বয়সে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধের সঙ্গে খুকির বিয়ে হয়েছিল। মাস যেতে না যেতেই স্বামী মারা যান। ১৯৮০ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর পরিবার, আত্মীয়-স্বজন তাকে ঘরছাড়া করেন। ভাইদের আপত্তিতে বাবার বাড়িতে তার জায়গা হয়নি। এরপর থেকেই কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি।

খবরের কাগজ বিক্রি করে একসময় প্রতিদিন ৩০০ টাকা আয় করতেন। এই আয় থেকে নিজের জন্য ব্যয় করতেন মাত্র ৪০ টাকা। হজে যাওয়ার তীব্র বাসনায় ১০০ টাকা ব্যাংকে জমা করতেন। আর ১৬০ টাকাই ব্যয় করতেন মানুষের সেবামূলক কাজে। এর মধ্যে ১০০ টাকা দিতেন এতিমখানায়, ৫০ টাকা দিতেন মসজিদ-মন্দিরে আর ১০ টাকা দিতেন ফকির-মিসকিনকে।

এতদিনে ব্যাংকে জমা হয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। সেই জমানো অর্থ আর পৈতৃকভাবে পাওয়া কিছু সম্পত্তিই তার জীবনের শেষ সম্বল। যা দিয়ে যেতে চান কোনো স্কুলের নামে। সেই দানের টাকা থেকে গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে বৃত্তি। মৃত্যুর পর তার লাশটা যেন জন্ম শহর কুষ্টিয়ায় দাফন করা হয়, সে ইচ্ছাই তিনি জানিয়েছেন। খুকির সময়টা এখন ভালো কাটছে না। কাটছে নানা দুঃখ-কষ্টে। প্রায় ৪০ বছর ধরে পত্রিকা বিক্রির সঙ্গে জড়িত খুকি।

প্রতিদিন সকালে তার শিরোইল মহল্লার বাসা থেকে বের হয়ে হেঁটে রাজশাহী মহানগরীর রেলগেট মার্কেটে পত্রিকার এজেন্টদের কাছ থেকে পত্রিকা কেনেন। তারপর সেখান থেকে হেঁটে হেঁটে রাজশাহীর রেলস্টেশন, আরডিএ মার্কেট, সাহেববাজার, সাগরপাড়া, শিরোইল বাস টার্মিনাল, আলুপট্টি ও নিউমার্কেট এলাকায় পত্রিকা বিক্রি করেন। এসব স্থানে তার কিছু নিয়মিত গ্রাহক আছে। এ ছাড়াও হেঁটে হেঁটে পত্রিকা বিক্রি করেন, কারো কাছ থেকে বাড়তি পয়সা পেলেও নেন না।

খুকির নানামুখী সমস্যা থাকলেও থাকেন নিজের বাড়িতে। বড় বোনের বাসা খুকির বাড়ির পাশেই। বড় বোনের ছেলে শামস-উর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘খালাকে আমরা পত্রিকা বিক্রি করতে নিষেধ করেছি। তিনি আমাদের কথা শোনেন না। তিনি পত্রিকা বিক্রি করে একা একাই চলতে চান।’

খুকি সম্পর্কে প্রতিবেশীরা বলছেন, তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। নিঃসন্তান নারীর বিয়ে হয় কিশোরী বয়সে। এক মাসের মাথায় স্বামী মারা যায়। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে তিনি একগুয়ে স্বভাবের হয়ে ওঠেন। বাবার কাছ থেকে পাওয়া জমিতে বাড়ি তৈরি করে একাই থাকেন। কারও কাছ থেকে কোনো সহায়তা নেন না। পত্রিকা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

অথচ ১১ বছর আগের ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে খুকির শেষদিকের কথাগুলো ছিল, ‘কেউ আমাকে এক পয়সার হেল্প করেনি। কী হবে এই সাক্ষাৎকার নিয়ে? কেউ তো আমাকে সাহায্য করবে না।’

খুকি যাদের কাছ থেকে পত্রিকা নেন; তাদেরই একজন লিটন ইসলাম বাবু। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, খুকি আপা আমার কাছ থেকে ১৩ বছর ধরে পত্রিকা নেন। কখনোই টাকা বাকি রাখেন না। টাকা-পয়সার বিষয়ে খুকি আপা সচেতন। শোধ করে তারপরে পত্রিকা নেন। তবে খুকির বর্তমান অবস্থা যে শোচনীয়, তা সার্কুলেশন ম্যানেজার বাবুর কথাতেই বোঝা গেল। কেননা আগে ১৫০ কপি পত্রিকা কিনলেও এখন কেনেন ৩০-৪০ কপি। অর্থাৎ খুকির আয়ের উৎস তলানিতে ঠেকেছে, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহীতে খুকির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন সেচ্ছ্বাসসেবী সংগঠন ‘অরেঞ্জ আর্মি বিডি’র কয়েকজন সদস্য। তারা খুকিকে একটি শীতের চাদর দিয়েছেন। এ ছাড়াও প্রাথমিক সাপোর্ট প্রয়োজন বলে জানান সংগঠনের সদস্য কামরুল তিহান। অরেঞ্জ আর্মি বিডি সংগঠনের পক্ষ থেকে খুকিকে হজে পাঠানো হবেও বলে তাদের পেজে জানানো হয়েছে।




No comments:

Post a Comment

দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বোমা হামলার পরিকল্পনা করেছিল .... ফোরকান

  অনলাইনে বিভিন্ন সিক্রেট অ্যাপ ব্যবহার করে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দিতেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদ হাসান ওরফে রাজু ওরফে ইসমাঈল ...